ভর্তি বিজ্ঞপ্তি

নভেম্বর ২৫, ২০২৪ Uncategorized
ভর্তি বিজ্ঞপ্তি

তাজুশ শরীআহ দরসে নিযামী মাদ্রাসা

-:ভূমিকা:-
বিসমিল্লা‌হির রহমা‌নির রহীম
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ!
আল-হামদুলিল্লাহ্। ওয়াসসালাতু ওয়াসসালামু আ’লা রাসূলিল্লাহ্। আম্মা বা’দ।

সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ!
ইসলাম আল্লাহ তা‘আলার একমাত্র পছন্দনীয় দীন। এ দীন পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব আলেমদের। দীন প্রচার—প্রসার করা দীন সংরক্ষণের একটি মৌলিক ও পূর্বশর্তমূলক কাজ। দীন সংরক্ষণের প্রধান দিক হলো ইলমে দীন তথা কুরআন ও সুন্নাহকে সংরক্ষণ করা। এ সুমহান লক্ষ্যে যুগে যুগে আল্লাহ তা‘আলার প্রিয় বান্দারা ইলমে দীনকে হেফাজত করার জন্য পৃথিবীর আনাচে—কানাচে অসংখ্য মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। মাদরাসাসহ সকল দীনি মারকাজ প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য ছিল ইলমে দীনকে সংরক্ষণ করা। জ্ঞানার্জন ও আমলের মাধ্যমে ইলমে দীন হেফাজতের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত এ সকল মাদরাসার মধ্যে আলিয়া মাদরাসার বর্তমান অবস্থা বড়ই নাজুক। শিক্ষার্থীদের অনেকেই এখন ইলমে দীনের উচ্চতর শিক্ষা (ফাযিল ও কামিল) গ্রহণ করা থেকে বঞ্চিত। যারাওবা গ্রহণ করছে তাদের অনেকেই আবার শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের জন্যে তা করছে। ক্লাসে বসে শিক্ষার্থীরা হাদীসের দরস গ্রহণ করবে বা শিক্ষকরা দরস প্রদান করবেন এটা এখন শুধুই ঐতিহ্য। হাতেগোনা কিছু কিছু আলিয়া মাদরাসায় এ ধারা বহাল থাকলেও তাও প্রায় যায় যায় অবস্থা। এ দূরাবস্থার পিছনে যে সকল কারণ রয়েছে তন্মধ্যে শিক্ষার্থীদের দুনিয়ামুখিতা এবং আরবী ভাষা ও ব্যাকরণে তাদের দূর্বলতা অন্যতম। তা ছাড়া বিশ্বায়নের এ যুগে জ্ঞান-বিজ্ঞানের উন্নতি-অগ্রগতি এবং প্রযুক্তির জয়জয়কারের মুহূর্তে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ ও মেধা-মননের লালনসহ বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতা অর্জন করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। যাতে করে সামগ্রিক উন্নতির ক্ষেত্রে জাতি এই মেধাবী সন্তানদের সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়।
তাই দীনি শিক্ষার সাথে সাধারণ শিক্ষার সমন্বয় ক‌রে আলিয়া মাদরাসার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে, ইলম ও আমলের সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদেরকে যোগ্য আলেম হিসেবে তৈরী করতে একটু ভিন্ন প্রয়াস প্রয়োজন। এ প্রয়াসেরই নাম ‘তাজুশ শরী‘আহ্ দরসে নিযামী মাদরাসা’। এখানে একজন শিক্ষার্থীকে একটি আবাসিক পরিবেশে রেখে স্পেশাল কেয়ারের মাধ্যমে রুটিন মাফিক জীবন যাপন করতে সাহায্য করা হয়। তাকে আমলের প্রতি যত্নবান হতে উৎসাহিত করা হয়। আরবীভাষা ও ব্যাকরণের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপের মাধ্যমে তাকে ইলমের স্বাদ পেতে সাহায্য করা হয়। ইলমের গভীরতা অর্জনের জন্য মৌলিক কিতাব অধ্যয়নের যোগ্যতা সৃষ্টির জন্য সুপরিকল্পিতভাবে দরসে নিযামী ও আলিয়া মাদরাসার সিলেবাসকে সমন্বয় করে পাঠদান করা হয়। বিভিন্ন শ্রেণিতে পর্যায়ক্রমে গুরুত্বপূর্ণ আরবী মূল কিতাব বা—তাহকীক খতম করানো হয়। সাথে সাথে উর্দূ ও ফার‌সি ভাষার সাথে পরিচয় করানো জন্য এসব ভাষার প্রাথমিক কিতাবগুলোকে যত্নের সাথে পড়ানো হয়। বিশেষ করে স্পোকেন ও গ্রামাটিক্যাল ইংলিশ যত্নের সাথে শেখানো হয়। একজন মাদরাসার শিক্ষার্থী যাতে সত্যিকারার্থে ইলমে দীনের ধারক ও বাহক হতে পারে সে জন্যে ফরজের পাশাপাশি দৈনন্দিন নফল আমল ইত্যাদি চর্চা করানো হয়। বিশেষ করে, নানা কারণে হাফেজ ছাত্রদের সেশন লস হওয়ায় ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত পাঁচ বছরের সিলেবাসকে সমন্বয় করে, নিজস্ব কিছু বইয়ের মাধ্যমে তাদেরকে মাত্র দু’বছরে ৮ম শ্রেণির উপযুক্ত করে গড়ে তোলার জন্য ‘এদাদিয়াহ’ (প্রাক—দরসে নিযামী) জামাত খোলা হয়েছে। আশা করি, দী‌নি শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্জনে আমাদের সুপরিকল্পিত পাঠদান সফলকাম হবে। আমরা দীনি শিক্ষার হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনতে পারবো, ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের কাজে সহায় হোন। আমীন।

মূলনীতি : * তা‘লীম * তাযকিয়া *দা’ওয়া
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য : কুরআন—সুন্নাহ ও আধুনিক জ্ঞানসমৃদ্ধ যোগ্য ও দক্ষ আলেমে—দীন তৈরী করা, যারা দা‘য়ী ইলাল্লাহর কাজ সফলভাবে পালন করতে পারবে।
বিভাগ:
* দরসে নিযামী [নিয়মিত ও বিশেষ]
শিক্ষাস্তর:
১। মুতাওয়াসসিতা : ২ বছর। [৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণি]
২। সানা‌বিয়্যাহ্ : ৩ বছর। [৮ম থেকে ১০ম শ্রেণি]
৩। আলিয়াহ্: ২ বছর। [আলিম/ফাযিল]
৪। ‘আলামিয়্যাহ্: ১ বছর। [কামিল]

#বৈশিষ্ট্যসমূহ:
দরসে নিযামী বিভাগ
১. গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় শিক্ষাক্রম অনুসরণ ও দরসে নিযামি নেসাবের সমন্বিত যুগোপযোগী পাঠ্যক্রম।
২. কুরআন ও সুন্নাহ অনুযায়ী উন্নত চরিত্র ও নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন দক্ষ দেশপ্রেমিক জনশক্তি গঠন।
৩. অভিজ্ঞ কারী দ্বারা তাজবীদসহকারে পবিত্র কুরআনের পাঠদান।
৪. তিনটি ভাষায় (বাংলা, আর‌বি ও ইং‌রে‌জি) দক্ষতা ও বাচনিক উৎকর্ষে গুরুত্বারোপ।
৫. উর্দু ও ফার্সি বিষয়ে বিশেষ পাঠদান।
৬. বিশেষ পদ্ধতিতে আরবি, বাংলা ও ইংরেজি হস্তলিপির চর্চা।
৭. সার্বক্ষণিক দক্ষ শিক্ষকের নিবিড় তত্ত্বাবধান।
৮. দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা।
৯. ক্লাসের পড়া ক্লাসেই শেষ করার ব্যবস্থা। প্রাইভেট পড়ার প্রবণতা রোধ।
১০. মেধা, মনন ও প্রতিভা বিকাশে সুস্থ সংস্কৃতির চর্চা।
১১. অভিভাবকদের সৎ ও যৌক্তিক পরামর্শের মূল্যায়ন।
১২. প্রতিভা বিকাশে জার্নাল—ম্যাগাজিন ও দেয়ালিকা প্রকাশ করা।
১৩. বাধ্যতামূলকভাবে কম্পিউটার শিক্ষা।
১৪. নির্ধারিত সময়ে লাইব্রেরি ওয়ার্কের ব্যবস্থা।
১৫. সাপ্তাহিক, পাক্ষিক ও মাসিক পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার মানোন্নয়ন।
১৬. বোর্ড পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ।
১৭. বিভিন্ন জাতীয় প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ।
১৮. স্বল্প খরচ ও উন্নত পরিবেশে মানসম্মত শিক্ষা, উন্নত আবাসিক ব্যবস্থাপনা ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন।
১৯. শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সচেতনতা এবং জরুরি ভিত্তিতে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা।
২০. বার্ষিক শিক্ষা সফর। উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার সুযোগ।
হিফযুল কুরআন বিভাগ:
১. সুদক্ষ ও অভিজ্ঞ হাফেযের তত্ত্বাবধানে পাঠদান।
২. প্রতিজন শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে ১৫ জন ছাত্রের পাঠাদান ।
৩. স্বল্প সময়ে তাজভীদ সহকারে নাযেরা সম্পন্ন করে হিফযের উপযোগী করা।
৪. আধুনিক পদ্ধতিতে স্বল্প সময়ে হিফয সম্পন্ন করার প্রয়াস।
৫. দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দোয়া—দরূদ ও মাসয়ালা—মাসায়েল শিক্ষা।
৬. প্রাথমিক বাংলা, গণিত ও ইংরেজি পাঠদান।
৭. হিফয সমাপ্তির পর দরসে নিযামীতে অধ্যয়নের সু‌যোগ।
৮. জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হিফয প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের উপযোগী করা।
অ্যাকাডেমিক্যাল সময়সীমা: (পরিবর্তন যোগ্য) সকাল ৮টা – দুপুর ১:২০টা। ক্লাসঃ ৪০:০০ মি.
সপ্তাহিক কার্যদিবস: ৬ পূর্ণকার্য দিবস
শ‌নিবার, রবিবার, সোমবার,মঙ্গলবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার ।
সপ্তাহিক ছুটি: জুমাবার।
বাৎসরিক ছুটি: অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার অনুযায়ী।
অ্যাকাডেমিক ইউনিফর্ম: সাদা টুপি, সাদা পায়জামা ও এক পকেট বিশিষ্ট সাদা পাঞ্জাবী।
ভর্তি যোগ্যতা:
দরসে নিযামী [নিয়মিত] বিভাগে শুধুমাত্র এ’দা‌দিয়াহ্ ১ম ও ২য়(৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রে‌ণি) বর্ষে ছাত্র ভর্তি করা‌নো হয়। এ বিভা‌গে ভ‌র্তি হ‌তে হ‌লে প্র‌ত্যেক ছাত্র‌কে মাদরাসা/স্কুল থেকে কমপ‌ক্ষে ৫ম শ্রেণি পাশ অথবা হা‌ফে‌জে কুরআন হতে হবে।
আর মুতাওয়াস‌সিতাহ্ ১ম বর্ষ (৮ম শ্রে‌ণি)- এ ভ‌র্তির জন্য উর্দূ ও ফার‌সি দেখে দে‌খে শুদ্ধভা‌বে পড়তে পার‌া এবং মিযান ও মুনশাইব জানা থাক‌তে হ‌বে।
দরসে নিযামী [বিশেষ] বিভা‌গে ভ‌র্তি জন্য দাখিল/আলিম পাশ অথবা অধ্যয়নরত হতে হবে।
ভর্তি পরীক্ষার বিষয় ও মানবন্টন:
আরবি বা ধর্ম— ২০, বাংলা— ২০, ইংরেজি— ২০, গণিত— ২০, সাধারণ জ্ঞান— ১০ এবং মৌখিক— ১০; মোট ১০০ নম্বর। পাশ নম্বর: ৪০।
বি:দ্র: শ্রেণি উপ‌যোগী পঠিত বিষয়সমূহ থেকে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়।
ভর্তি/পুনঃভর্তি প্রক্রিয়া
১. নির্ধারিত ফি আদায় করে ভর্তি ফরম সংগ্রহ করা ও জমাদান।
২. নির্ধারিত তারিখে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা।
৩. ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে নিম্নোক্ত ফি—সমূহ পরিশোধের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা।
৪. বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত ফি—সমূহ পরিশোধ করে পুনঃভর্তি সম্পন্ন করা।
ভর্তি ফরমের সাথে প্রযোজ্য:
১. ছাত্রের পাসপোর্ট সাইজের ছবি ২ কপি।
২. ছাত্রের জন্মনিবন্ধনের ফটোকপি।
৩. মাতা—পিতা/অভিভাবকের পাসপোর্ট সাইজের ছবি ২+২ কপি।
৪. অভিভাবকের জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
৩. পূর্ববর্তী প্রতিষ্ঠানের প্রশংসাপত্র / নম্বরপত্র।
ফি—সমূহের বিবরণ:
ভর্তি ফরম ফি: ১০০/= (একশত টাকা)
নতুন ভর্তি
১. ভর্তি ফি: ৩০০০/—
২. মাসিক খোরাকী: ৩০০০/—
৩. মাসিক বেতন: ৩০০০/—
ভর্তির সময় মোট প্রদেয়: ৯০০০/—
প্রতি মাসে প্রদেয়:
আবাসিক : ৬,০০০/—
(খোরাকী- ৩০০০ + বেতন- ৩০০০)
অনাবাসিক : ৩০০০/— (শুধু মাসিক বেতন)
বি:দ্র: প্রতি চলতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে যাবতীয় ফি পরিশোধ করতে হবে।
ভর্তি কার্যক্রম:
ভর্তিফরম বিতরণ: ০১ নভেম্বর ‘২৪ থেকে ০৬ জানুয়ারি ’২৫ পর্যন্ত।
সবক অনুষ্ঠান: ০৮ জানুয়ারি ’২৫, বুধবার; সকাল ১০ ঘটিকা।
যোগাযোগ
মুহাম্মদ খাইরুল্লাহ
উপাধ্যক্ষ
তাজুশ শরী‘আহ দরসে নিযামী মাদ্রাসা
আ‌লিফ ভবন, বিবিরহাট, কাঁচাবাজার (২নং গলি), ষোলশহর, চট্টগ্রাম
মোবাইল: ০১৮৭৪—৪৫৯১৭৫ / ০১৮১৭—৭৩৪১৭৮

হোয়াটসাঅ্যাপ চ্যাট